আজকাল যে কোনও সমস্যারই ছোটখাটো অজস্র ঘরোয়া টোটকা রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু টোটকা দিয়ে দারুণ ভালো কাজ হয়, সময়ও বাঁচে, আবার কিছু টোটকা আখেরে ক্ষতিই করে! ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে এই দ্বিতীয় কথাটা বিশেষভাবে সত্যি। ঘরোয়া টোটকা হিসেবে ব্রণর ওপরে অনেকেই টুথপেস্ট বা ভিকস লাগান, কিন্তু এর ফলে ত্বকের ক্ষতি হয়ে যায়।
কাজেই ঘরোয়া টোটকা দিয়ে ত্বকের সমস্যা সামলাতে গিয়ে ত্বকেরই ক্ষতি যাতে না হয়, তার জন্য কিছু ত্বক পরিচর্যার টোটকার কথা বলছি আমরা, এবং সেই সঙ্গে সাবধান করে দিচ্ছি আপনাদের। কোনও পরিস্থিতিতেই এ সব টোটকা ব্যবহার করতে যাবেন না। জেনে নিন কেন!
- 01. ব্ল্যাকহেড খুঁটে তোলা
- 02. ব্লিচ হিসেবে লেবুর রসের ব্যবহার
- 03. ঠোঁটে ফোলাভাব আনতে দারচিনির ব্যবহার
- 04. ত্বক ফরসা করতে বেকিং সোডার ব্যবহার
- 05. মুখে ওয়্যাক্স লাগানো
01. ব্ল্যাকহেড খুঁটে তোলা

একটা কথা মাথায় বসিয়ে নিন এই মুহূর্ত থেকে: "কখনও ব্ল্যাকহেডস খুঁটে তোলার চেষ্টা করবেন না!" ব্ল্যাকহেডস খুঁটে তুলতে গেলে ত্বকে জ্বালা করতে পারে, তা ছাড়া কাজটা যথেষ্ট যন্ত্রণাদায়কও বটে! ব্ল্যাকহেডসের ক্ষেত্রে একটি প্রচলিত ঘরোয়া টোটকা হল পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে তার ওপরে একটা গরম তোয়ালে চাওয়া দিয়ে ব্ল্যাকহেড গলিয়ে দেওয়া। কিন্তু এই পদ্ধতি মানতে গেলে আপনার রোমছিদ্র আরও বন্ধ হয়ে গিয়ে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না! ব্ল্যাকহেডসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হল সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে তা তুলে ফেলা।
02. ব্লিচ হিসেবে লেবুর রসের ব্যবহার

ঘরোয়া টোটকা হিসেবে লেবুর রস/ খুবই প্রচলিত এবং একাধিক ঘরোয়া রূপচর্চার উপাদানে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়। এমনিতে লেবুর রস পাতলা করে অ্যাসিডিটি কমিয়ে ত্বকে লাগালে তা মোটের ওপর নিরাপদ। কিন্তু লেবুর রস কখনও সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়। মুখ, বাহুমূল বা ঠোঁটের কালচেভাব কমাতে ব্লিচ হিসেবে লেবুর রস ব্যবহার করলে ত্বকের খুব ক্ষতি হয়ে যাবে, কারণ লেবুর রস থেকে ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে, ত্বক থেকে আঁশের মতো উঠতে পারে, ত্বকে জ্বালাও করতে পারে।
03. ঠোঁটে ফোলাভাব আনতে দারচিনির ব্যবহার

লিপ প্লাম্পিং বা ঠোঁটের তরতাজা টুসটুসেভাব দেখতে ভালো লাগে, ফলে ইন্টারনেটেও এমন প্রচুর টোটকার ছড়াছড়ি রয়েছে, যা কোনওরকম ইনজেকশন বা অপারেশন ছাড়াই ঠোঁট সাময়িকভাবে প্লাম্প করে দেওয়ার দাবি করে! তেমনই একটি টোটকা হল দারচিনির গুঁড়ো আর মধু মিশিয়ে ঠোঁটে ঘষা। কিন্তু এতে শেষ পর্যন্ত ঠোঁটেরই ক্ষতি হয়। ঠোঁটের ত্বক অত্যন্ত পাতলা আর নরম। তাই দারচিনি লাগালে ঠোঁটে খুব জ্বালা করবে যা থেকে ত্বকের ক্ষতিও হতে পারে। অনেকের আবার দারচিনিতে অ্যালার্জিও থাকে, তাই এমন ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই!
04. ত্বক ফরসা করতে বেকিং সোডার ব্যবহার

বেকিং সোডা সাময়িকভাবে ত্বক উজ্জ্বল করতে পারে, কিন্তু একই সঙ্গে তা ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। ত্বকের স্বাভাবিক তেলের আস্তরণ নষ্ট হয়ে গিয়ে ত্বক ভীষণ শুকনো হয়ে যায়। তাই কখনওই গায়ের রং ফরসা করতে বেকিং সোডা মাখবেন না!
05. মুখে ওয়্যাক্স লাগানো

মুখে একান্তই ওয়্যাক্সিং করতে হলে পার্লারে যান। একমাত্র পেশাদার বিউটিশিয়ানকে দিয়ে আর ভালো হেয়ার রিমুভিং প্রডাক্ট দিয়েই মুখে ওয়্যাক্সিং করানো উচিত। হোয়াইটহেডস, ট্যানিং বা মৃত কোষ কমানোর জন্য বাড়িতে বসে মুখে ওয়্যাক্সিং করার ঝুঁকি নিলে আপনার ত্বক পুড়ে যেতে পারে, পাকাপাকি বিশ্রী দাগও হয়ে যেতে পারে। কাজেই সাবধান!
Written by Manisha Dasgupta on 18th Feb 2021